বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণই বিএনপির সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে দলকে নতুনভাবে শক্তিশালী করার চেষ্টা চলছে। গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন থেমে থাকবে না।
আজ সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বড় মাঠে অনুষ্ঠিত জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান অভিযোগ করেন, বিগত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার দেশে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, রাজনৈতিক দলগুলোর জবাবদিহিতা নষ্ট করেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে গুম-খুনের রাজনীতি চালিয়েছে এবং বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের লাখ লাখ গায়েবি মামলায় হয়রানি করেছে।
তিনি আরও বলেন, গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে প্রায় তিন কোটি নতুন ভোটার ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি। ফলে ভোটের অধিকার পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে আওয়ামী লীগ শিশু ও শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে রাস্তায় গুলি করে হত্যা করেছে। দেশের অর্থনীতি, শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও কর্মসংস্থান সব খাতই ধ্বংস করেছে। মেগা প্রকল্পের নামে হয়েছে মেগা দুর্নীতি।
রাজনৈতিক সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিভিন্ন দল তাদের মতামত দিয়েছে। কিছু বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি হলেও কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য রয়ে গেছে। সেসব বিষয় জনগণের হাতে ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্রের সৌন্দর্য হলো মতের ভিন্নতা থাকা। যেমন আজকের সম্মেলনে প্রার্থীরা কাউন্সিলরদের কাছে গিয়েছেন, মতামত নিয়েছেন এবং সেই মতামতের ভিত্তিতেই নতুন নেতৃত্ব গঠিত হয়েছে। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে কার হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব যাবে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনার টেবিলে জনগণকে বাদ দিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে চায়, তবে দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হবে এবং স্বৈরাচারের ফিরে আসার সুযোগ তৈরি হবে।
বিএনপি জনগণের কাছে ৩১ দফা রূপরেখা দিয়েছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে সেই কর্মসূচির আলোকে দেশ পরিচালিত হবে। অর্থনীতি পুনর্গঠন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও কর্মসংস্থানের সংস্কারের মাধ্যমে সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেন তিনি।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি যতটা সহজ মনে হচ্ছে, বাস্তবে ততটা নাও হতে পারে। তাই নেতাকর্মীদের সতর্ক থেকে দুটি শপথ নিতে হবে—
১. গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
২. জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করবে বিএনপি।
এর আগে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ও রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু উপস্থিত ছিলেন।