অসুস্থতার পর প্রায় দেড় মাস পর জনসম্মুখে এসে বক্তব্য রাখলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। কথা বলার শুরুতেই তিনি মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন—সুস্থ হয়ে পুনরায় মানুষের সামনে দাঁড়ানোর সুযোগ দেওয়ার জন্য।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা-১০ আসনের কাফরুল দক্ষিণ থানার উদ্যোগে আয়োজিত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এই বক্তব্য দেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় পর মিডিয়ার সামনে দাঁড়ানোর তৌফিক আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন। এজন্য মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আল্লাহ তৌফিক না দিলে আমি আজ এখানে এসে কথা বলতে পারতাম না। এই সময়ে আমার মনে হয়েছে, জাতিকে কিছু বলার দায়িত্ব আমার। এই দায়িত্ব অন্য কেউ পালন করতে পারবে না। তাই আমি আল্লাহর দরবারে তৌফিক কামনা করেছিলাম—যেন অন্তত সেই কথাগুলো বলতে পারি, যা মানুষের কল্যাণে জরুরি। আল্লাহ সেই সুযোগ দিয়েছেন।”
নিজের অসুস্থতার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “সমাবেশের দিন আমি হঠাৎ পড়ে যাই। তখন দেশের মানুষ টিভি স্ক্রিন কিংবা মোবাইলে তা দেখছিলেন। তাদের মধ্যে ইউনাইটেড হসপিটালের খ্যাতিমান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মমিনুজ্জামানও ছিলেন। তিনি তখনই অনুমান করেন, আমার সমস্যাটা মস্তিষ্কজনিত নয়, বরং হৃদ্যন্ত্রে হতে পারে। পরবর্তীতে তাঁর আহ্বানে আমি চিকিৎসা নিই।”
জামায়াত আমির জানান, তাঁর স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে ২২ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠিত হয়। তারা হৃদ্যন্ত্রে ব্লক শনাক্ত করেন এবং ঝুঁকি বিবেচনায় দেশের বাইরে চিকিৎসার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, “চিকিৎসকরা সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক কিংবা আমেরিকার মতো দেশের নাম বলেছিলেন। আমি তাদের আন্তরিক পরামর্শের জন্য কৃতজ্ঞ। তবে আমি জিজ্ঞেস করলাম—আল্লাহ কি কেবল সেই দেশগুলোতেই আছেন? চিকিৎসকরা বললেন, আল্লাহ সর্বত্র আছেন। তখন আমি বললাম, আল্লাহ যদি সেখানে সুস্থ করতে পারেন, তবে তিনি চাইলে আমার জন্মভূমি বাংলাদেশেও আমাকে সুস্থ করতে পারেন।”
তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, “সুস্থতা-অসুস্থতা কার হাতে—এক বাক্যে সবাই স্বীকার করেছেন, আল্লাহর হাতে। তাই আমি বিশ্বাস করি, আল্লাহই আমাকে আবার জনসম্মুখে দাঁড়ানোর শক্তি দিয়েছেন।”