নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানিয়েছেন, কোনো রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বা কার্যক্রম স্থগিত থাকলে, সেই দলের নির্বাচনী প্রতীকও স্থগিত থাকবে। এ অবস্থায় দলটি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তবে প্রতীক ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কেউ নির্বাচন করতে পারবেন কি না—তা সময়ই বলে দেবে।
যদিও তিনি সরাসরি কোনো দলের নাম উল্লেখ করেননি, তবে তার বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে, আওয়ামী লীগের ওপর থাকা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার না হলে দলটি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নিয়ে অংশ নিতে পারবে না।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন সংক্রান্ত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতীক ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থিতা?
ইসি সানাউল্লাহ বলেন, “প্রতীক ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কেউ দাঁড়াতে পারবেন কি না, সেটা সময় বলে দেবে।” তবে নিবন্ধন স্থগিত থাকলে দলের প্রতীক ব্যবহার করা যাবে না—এ বিষয়ে কমিশনের অবস্থান স্পষ্ট।
তিনি কোনো দলের নাম উল্লেখ না করলেও, আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক স্থগিতাদেশের প্রেক্ষিতে তাঁর এ বক্তব্য এসেছে বলে মনে করছেন অনেকে।
আরপিও সংশোধনে কী আছে?
আজকের ব্রিফিংয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের বেশ কিছু দিক তুলে ধরেন নির্বাচন কমিশনার। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হলো:
- সশস্ত্র বাহিনীকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
- জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ভোটকেন্দ্র স্থাপনের দায়িত্বে থাকবেন।
- আদালতের ফেরারি ব্যক্তিরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
- লাভজনক পদে থাকলে নির্বাচনে অংশ নেওয়া যাবে না। একই নিয়ম প্রযোজ্য সরকারি ৫০ শতাংশ বা তার বেশি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের জন্যও।
- হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিলে সংসদ সদস্য পদ বাতিলের সুযোগ রাখছে কমিশন।
- জামানতের পরিমাণ বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে (আগে ছিল ২০ হাজার)।
আরও কিছু পরিবর্তন
- কোনো আসনে একক প্রার্থী থাকলে ব্যালটে ‘না’ ভোটের ব্যবস্থা থাকবে।
- জোটবদ্ধ নির্বাচনেও প্রার্থীরা নিজ নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করবেন।
- ইভিএম ব্যবহারের বিধান বাতিল করা হয়েছে।
- গণমাধ্যমকর্মীরা ভোট গণনায় উপস্থিত থাকতে পারবেন।
- নির্বাচনী পোস্টার বাতিল করা হয়েছে।
- সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে আচরণবিধি ভঙ্গ করা যাবে না।
- নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ও প্রতীক স্থগিত থাকবে।
নির্বাচন কমিশন বলছে, এসব সংশোধনের লক্ষ্য হলো একটি অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা।