নেপালে জেন জি আন্দোলনে পুলিশের গুলি, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪

চ্যানেল এইচ ডেস্ক

নেপালে তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে চলমান জেন জি আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪ জনে দাঁড়িয়েছে। নেপালি সংবাদমাধ্যম দ্য হিমালয়ান টাইমস জানিয়েছে, বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও কয়েকজনের মৃত্যু হওয়ায় হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে।

শতাধিক বিক্ষোভকারী, সাংবাদিক ও নিরাপত্তাকর্মী আহত হয়েছেন, যাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রাজধানী কাঠমান্ডুর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে, তবে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় কিছু আহতকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে ছয়জন ন্যাশনাল ট্রমা সেন্টারে, তিনজন সিভিল হাসপাতালে, তিনজন এভারেস্ট হাসপাতালে, একজন কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজে এবং একজন ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় টিচিং হাসপাতালে মারা গেছেন। প্রশাসন জানিয়েছে, নিহত ও আহতদের মধ্যে অনেকের পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।

সংঘর্ষ শুরু হয় সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর), যখন বিক্ষোভকারীরা কাঠমান্ডুর নতুন বাণেশ্বরে পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করে। পুলিশ জলকামান, টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট এবং আকাশে গুলি চালিয়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এর আগে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে, গাছের ডাল ও পানির বোতল ছুড়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায় এবং দুর্নীতিবিরোধী স্লোগান তোলে। সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে অন্তত একজন বিক্ষোভকারী ঘটনাস্থলেই নিহত হন বলে সিভিল হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক মোহন চন্দ্র রেগমি নিশ্চিত করেছেন। নিহতের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

সরকারি দুর্নীতি এবং সম্প্রতি ২৬টি অনিবন্ধিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম—যার মধ্যে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব ও স্ন্যাপচ্যাট রয়েছে—নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হাজারো তরুণ রাস্তায় নেমে আসে। আন্দোলন ইতোমধ্যে দেশের অন্যান্য বড় শহরেও ছড়িয়ে পড়েছে।

সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন নতুন বাণেশ্বর, সিংহদরবার, নরায়ণহিটি ও সংলগ্ন সংবেদনশীল এলাকায় কারফিউ জারি করেছে। স্থানীয় প্রশাসন আইনের ৬ নম্বর ধারা অনুসারে সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কারফিউ কার্যকর থাকবে।

কারফিউয়ের আওতায় পড়েছে—নতুন বাণেশ্বর চৌক থেকে পশ্চিমে এভারেস্ট হোটেল ও বিজুলি বাজার আর্চ ব্রিজ পর্যন্ত, পূর্বে মিন ভবন ও শান্তিনগর হয়ে টিঙ্কুনে চৌক পর্যন্ত, উত্তরে আইপ্লেক্স মল থেকে রত্ন রাজ্য সেকেন্ডারি স্কুল পর্যন্ত এবং দক্ষিণে শান্তিনগর হয়ে শঙ্খমুল ব্রিজ পর্যন্ত এলাকা।

আপনার মন্তব্য

Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Space for ad

অনুসরন করুন

সর্বশেষ খবর

স্বত্ব © ২০২৫ চ্যানেল এইচ নিউজ

Design & Developed : Rose IT BD