প্রবীণ লেখক, গবেষক ও রাজনীতিক বদরুদ্দীন উমর আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৫ মিনিটে তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।
বদরুদ্দীন উমরের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা। তিনি জানান, অসুস্থ অবস্থায় বাসা থেকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে সকাল ১০টা ৫ মিনিটে মৃত ঘোষণা করেন।
বদরুদ্দীন উমর ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৮ সালে বর্ধমান টাউন স্কুল থেকে প্রবেশিকা ও ১৯৫০ সালে বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে দর্শনে স্নাতক ও ১৯৫৫ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্নের পর ১৯৬১ সালে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিপিই ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি কর্মজীবন শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে। পরবর্তীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৮ সালে শিক্ষকতা ছেড়ে পূর্ণ সময় রাজনীতিতে যুক্ত হন।
পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোট, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনসহ একাধিক রাজনৈতিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। লেখালেখিতে ছিলেন সমান সক্রিয়; রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় একশ, যা দুই বাংলায় সমাদৃত। সংবাদপত্রে দীর্ঘদিন নিয়মিত কলামও লিখেছেন তিনি।
তার গবেষণামূলক উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে—‘পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ (তিন খণ্ডে), ‘সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতা’, ‘পূর্ব পাকিস্তানের ভাষা ও সংস্কৃতি’, ‘বাঙালীর সমাজ ও সংস্কৃতির রূপান্তর’, ‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও উনিশ শতকের বাঙালী সমাজ’ এবং ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে বাংলাদেশের কৃষক’।
২০২৫ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হলেও তিনি তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান।