শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে ফের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর তিন দিক থেকে আক্রমণ করা হয়েছে। এতে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন), প্রক্টরসহ অন্তত ৭০ জন আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষের ঘটনায় ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। তবে এখনো সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা সেনা সদস্যদের দেখা যায়নি। সংঘর্ষে ক্রমেই বাড়ছে আহতের সংখ্যা।
জানা যায়, সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যসহ অন্তত প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের অধিকাংশই দেশীয় অস্ত্র দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত ও রক্তাক্ত।
আজ রোববার (৩১ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট সংলগ্ন লন্ডনি বিল্ডিং এলাকার কাছে সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িঘর লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে দেখা গেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষই ইট-পাটকেল নিক্ষেপ এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালালে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে শনিবার (৩০ আগস্ট) রাত সোয়া ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থী তার ফ্ল্যাট বাসায় প্রবেশ করতে চাইলে তাকে মারধর করে বাসার দারোয়ান। তবে আশপাশের শিক্ষার্থীদের দেখে দারোয়ান পালিয়ে যায়। এসময় স্থানীয়রা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। এতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ ঘটনার জের ধরে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান স্থানীয় বাসিন্দারা। গতকাল দিবাগত রাত ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২নং গেইট সংলগ্ন এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা বহু শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করার অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনার পর রোববার (৩১ আগস্ট) সকাল থেকেই পুরো ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এছাড়া আহতদের কথা বিবেচনায় নিয়ে আজকের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন আজ রোববার (৩১ আগস্ট) দুপুরে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জননিরাপত্তা ও শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট থেকে পূর্ব-দক্ষিণ সীমান্ত পর্যন্ত এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এটি কার্যকর থাকবে ৩১ আগস্ট বিকেল ৩টা থেকে আগামী ১ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টা পর্যন্ত।
এ সময়ে উন্মুক্ত স্থানে সকল প্রকার সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং, গণজমায়েত, অস্ত্র বহন ও পাঁচজনের বেশি লোকের একত্রিত হওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
তবে বিকেল পৌনে ৪টায় প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কোনো বাহিনীর উপস্থিতি দেখা যায়নি।