কোন সমঝোতা ছাড়াই শেষ হলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আলাস্কা বৈঠক। তিন ঘণ্টার বৈঠকের পর ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির কাঙ্খিত কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। বৈঠকের পর দুই নেতা যৌথ বিবৃতি দিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে হাজির হন, তবে কোনো প্রশ্ন নেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টায় (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টা) এলমেনডর্ফ–রিচার্ডসন সামরিক ঘাঁটিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প–ভ্লাদিমির পুতিন দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শুরু হয়। দীর্ঘ সাড়ে ৩ ঘণ্টা বৈঠকের পর দুই নেতা যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘একটি স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য আমাদের এই সংঘাতের মূল কারণগুলো নিরসন করতে হবে। ইউক্রেনীয় ও ইউরোপীয়রা শান্তিপ্রক্রিয়ায় বাধা না দেওয়ার পথ বেছে নেবেন বলে আশা করছেন তিনি।’
তিনি বলেন, ‘শুভ কামনার স্বর প্রকাশের জন্য আমি ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’ একইসঙ্গে তিনি বলেন, উভয়পক্ষকেই ফলাফলকেন্দ্রিক হওয়া উচিত। ট্রাম্প স্পষ্টত তার দেশের সমৃদ্ধির বিষয়ে মনোযোগী। তবে তিনি এটাও বুঝেছেন, রাশিয়ারও নিজের স্বার্থ রয়েছে।’
যৌথ সংবাদ সম্মেলেনে প্রথমে কথা বলেন পুতিন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া মহাসাগর দ্বারা আলাদা হলেও তারা খুব কাছের প্রতিবেশী।
পুতিন বলেন, ‘রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ব্যবধান মাত্র চার কিলোমিটারের (এখানে আলাস্কার ছোট কোনো দ্বীপের সঙ্গে রাশিয়ার নিটকতম জলসীমার কথা বোঝানো হয়েছে)। আমরা অত্যন্ত কাছের প্রতিবেশী। এটিই বাস্তবতা।’
এ কারণে আলাস্কার এলমেনডর্ফ–রিচার্ডসন সামরিক ঘাঁটির টারমাকে দুজনের মধ্যে করমর্দনের সময় ট্রাম্পকে ‘হ্যালো, প্রতিবেশী’ বলে সম্বোধন করেছেন বলেও জানান পুতিন।
প্রাথমিক এসব কথার পর সংবাদ সম্মেলন পুতিন আলাস্কার ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আলাস্কা এক সময় রাশিয়ার অংশ ছিল, যা ১৮০০-এর মাঝামাঝি দশকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিক্রি করা হয়।
পুতিন আরও বলেন, আলাস্কায় এখনো রাশিয়ান ‘অর্থোডক্স চার্চ’ রয়েছে। তিনি মনে করেন, এই ঐতিহ্য পরস্পরের জন্য উপকারী এবং ন্যায্য সম্পর্ক পুনর্নির্মাণে সাহায্য করতে পারে।
এরপর পুতিন ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পটভূমি তুলে ধরেন। তার দেশ কেন এই সংঘাতে জড়িয়েছে, সেই যুক্তিও উপস্থাপন করেন।